খাগড়াছড়ির গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া, বড় পিলাক সহ বিভিন্ন এলাকায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ‘কিশোর গ্যাং’। প্রায় অর্ধশত কিশোর ও তরুণকে নিয়ে গড়ে তোলা এ দলের নাম ‘বড় ভাই গ্রুপ’। এর নিয়ন্ত্রণে আছেন ওই এলাকার তরুণ মো. নাঈম বিল্লাহ। দলের সদস্যরা তাঁকে ‘বড় ভাই’ বলে সম্বোধন করেন। নাঈম বিল্লাহ হাফছড়ি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড জালিয়াপাড়া এলাকার বাসিন্দা। এ তরুণের বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও সরবরাহ,অপহরণের চেষ্টা, চাঁদাবাজি, হুমকি ধামকি, বিভিন্ন পথচারীর ওপর হামলাসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। তাঁর অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে মো.রাসেল , মোঃ জাকির হোসেন, মংসুইসা মারমা,জয় হাওলাদার সহ অনেকের নাম বলেছেন স্থানীয় লোকজন।
উপজেলায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে উঠতি বয়সের কিশোররা। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে নানান তথ্য। ১৯ জানুয়ারি দিবাগত রাতে জালিয়াপাড়া মোড়ে মুরগির গাড়ি থেকে দুই হাজার টাকা চাদা আদায়। ২৩ জানুয়ারি সকালে ৫/৬ মিলে সিএনজি চালককে অপহরণের চেষ্টা। ২৬ জানুয়ারি বড়পিলাক এলাকার জৈনক প্রতিবন্ধী আঃ রহিমের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা চাদা আদায়। নারীদের উত্ত্যক্তকরা, চুরি, ছিনতাই, অপহরণের চেষ্টা,মাদক সেবন ও সরবরাহ, এমনকি এলাকাভিত্তিক ছোট-বড় গ্যাং তৈরি করে দলগতভাবে এসব অপরাধ কর্ম করে বেড়াচ্ছে সন্ত্রাসী কায়দায় এই কিশোর গ্যাং।
স্থানীয়রা বলেন, ‘বড় ভাই গ্রুপের অত্যাচারে আমরা এলাকাবাসী অতিষ্ঠ। ভয়ে মুখ খুলতে পারিনা, কখন কার ওপর হামলা হয় এই আতংকে থাকি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবকরা বলেন, কিশোর গ্যাংয়ের কারণে আমাদের ছেলে মেয়েকে স্কুলে পাঠিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয়। কখন রাস্তায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা কি করে ফেলে। প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি কিশোর গ্যাংয়ের প্রতি সজাগ দৃষ্টি রাখার। রীতিমতো করছে চাঁদা দাবি, চাদা দিতে অস্বীকার করলে হতে হয় অত্যাচারের শিকার,দিচ্ছে প্রাণনাশের হুমকি।
স্থানীয়দের দাবি দ্রুত কিশোর গ্যাং সদস্যদের প্রতিহিত করতে না পারলে তার প্রভাব ছড়িয়ে পড়বে পুরো এলাকা জুড়ে। এছাড়াও কিশোর গ্যাংয়ের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। সচেতন মহল বলেছেন, পত্রিকার পাতা খুললেই কিশোর গ্যাং।
বর্তমানে কিশোর গ্যাং একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়গুলোর প্রতি পরিবারের সদস্যদের সচেতন হতে হবে। কিশোরদের সচেতনতার জন্য পরিবারকে দায়িত্ব নিতে হবে। এটি বাবা-মার সামাজিক, নৈতিক ও ধর্মীয় দায়িত্বও বটে। তারা আরো বলেন, গুইমারা উপজেলা জুড়ে এক আতঙ্কের নাম কিশোর গ্যাং। চুরি-ছিনতাই, অপহরণের চেষ্টা, বিভিন্ন ভাবে সুকৌশলে চাদাআদয় করার মাধ্যমে নিজেদের আধিপত্য দেখাতে গ্যাং সদস্যরা জড়িয়ে পড়ছে সংঘর্ষে।
এদের হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না শিক্ষক-শিক্ষার্থী কিংবা পথচারী। এ গ্যাংদের দমনে প্রশাসনের কঠোর অবস্থানের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধি ও অভিভাবকদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ সুধিজনদের।