লামায় ভাইয়ের হাতে ভাই খুন। দু’সপ্তাহের ব্যবধানে মায়ের হাতে সন্তান আর ভাইয়ের হাতে ভাই খুন হলো। সামাজিক এমন অবক্ষয় কেন হয়েছে। এই বর্বরতা, নির্দয়-নিষ্ঠুরতা রোধে কি কিছু করার নেই (?)। গত ৬ সেপ্টেম্বর লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ড বগাইছড়ি গ্রামে মা ভাই মিলে শামসুর নাহার বেগম (৪৭)কে কুপিয়ে হত্যা করে(!)। এই নরকীয় ঘটনার পেছনে যে স্বার্থ দ্বন্ধ ছিলো, সেটি একটি গরুর ভাগ বন্টন। হাজারো ত্যাগ আর জীবনের সবটুকু বিকিয়ে দিয়ে বড় করা সন্তানকে মা খুন করলো একটি গরুর অংশ বন্টন নিয়ে। যে ভাইকে কোলে পিঠে করে মাতৃস্নেহে গড়ে তুলেছে, সামান্য স্বার্থে সে ভাই কি করে পারলো মাতৃতুল্য বড় বোনকে কুপিয়ে মারতে(?)। হত্যাকারী মা ও ভাইকে পুলিশ আটক করে জেলে পাঠিয়েছে। এদিকে দু’ সাপ্তাহের ব্যবধানে উপজেলার ফাইতং ইউনিয়নে আপন সহোদরদ্বারা খুন হলো আরেক হতভাগা ছোট ভাই। জানাযায়, বড় ভাই মো. ইউনুছের (২৪) লাঠির আঘাতে ছোট ভাই মো. আব্দুর রশিদ (২২) খুন হয়। হত্যার পর ছোট ভাইয়ের লাশ পাহাড়ে গুম করে রাখেন বড় ভাই ইউনুছ। ঘটনার একদিন পর সোমবার দিনগত গভীর রাতে ঘাতক মো. ইউনুছ নিজে স্বজনদের সহায়তায় নিহত ছোট ভাই আব্দুর রশিদের লাশ উদ্ধার করে। পরে পুলিশি জিঙ্গাসাবাদে ছোট ভাইকে হত্যার ঘটনা স্বীকার করে ইউনুছ। তারা মধ্যম রাঙ্গাঝিরি পাড়ার বাসিন্দা আবুল কালামের ছেলে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মধ্যম রাঙ্গারঝিরি বাসিন্দা কৃষক আবুল কালামের ৪ ছেলে ও এক মেয়ে। বড় ছেলে মো. ফিরোজ (৪০) সৌদি প্রবাসী। বিভিন্ন সময় প্রবাসী মো. ফিরোজ পারিবারিক কাজে ইউনুছ ও আব্দুর রশিদের কাছে টাকা পাঠাতেন। এসব টাকার হিসাব নিয়ে রবিবার দিনগত রাত পৌনে দশটার দিকে মধ্যম রাঙ্গারঝিরির একটি সড়কের উপর ইউনুছ ও আব্দুর রশিদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ইউনুছ ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে ঘটনাস্থলে ছোট ভাই আব্দুর রশিদ মারা যান। পরে ইউনুছ ছোট ভাই আব্দুর রশিদের লাশ জঙ্গলে লুকিয়ে রেখে বাড়িতে চলে যান। একদিন পর সোমবার দিনগত রাতে ইউনুছ স্বজনদের সহায়তায় ওই পাহাড় থেকে আব্দুর রশিদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত শুরু করেন। জিঙ্গাসাবাদে ছোট ভাই আব্দুর রশিদকে লাঠি দ্বারা আঘাত করে খুন করে পাহাড়ে লাশ লুকিয়ে রাখার ঘটনা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন মো. ইউনুছ। পরে এ ঘটনায় ঘাতক ইউনুছের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা রুজু করা হয়। লামা থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামীম শেখ বলেন, টাকার হিসাব নিয়ে লাঠির আঘাতে আব্দুর রশিদ নিহতের ঘটনায় ঘাতক বড় ভাই মো. ইউনুছকে আটক করে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।