জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
রোববার বিকেল ৪টায় হাইকোর্টে নাইকো মামলা বাতিল চেয়ে খালেদার আবেদনের শুনানি চলছিল। শুনানির এক পর্যায়ে হাইকোর্ট বলেন, এখন আমরা আগাম জামিন আবেদন শুনব। আজ আর আর নাইকো মামলা শুনব না। সোমবার সকাল ১১টা থেকে শুনানি শুরু হবে। আগামীকাল খালেদা জিয়ার আইনজীবী ১৫ মিনিট সময় পাবেন শুনানির। এরপর দুদক শুনানি করবে, তারপর রাষ্ট্রপক্ষ।
এ সময় দুদক আইনজীবী খুরশীদ আলম খান আদালতকে বলেন, মাই লর্ড অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী সব কাজ ফেলে এখানে এসেছেন শুনানি করতে। কাজেই তাকে শুনানি করার সুযোগ দিন। এতে আপত্তি জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবী সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী।
তখন তিনি কোর্টকে বলেন, উনার সময়ের দাম আছে আমরা কি কোর্টে ভেরেন্ডা ভাজতে এসেছি? এতে কোর্টে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। এরপর আবারও শুনানি শুরু করেন খালেদার আইনজীবী। খালেদার আইনজীবীর শুনানি শেষ হলে ৪টা ১০ মিনিট থেকে শুনানি শুরু করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাছান চৌধুরী।
রোববার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানিতে এ ঘটনা ঘটে।
গত ৯ আগস্ট নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার আবেদনের শুনানি শুরু হয় হাইকোর্টে।
সে দিন খালেদার পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। দুদকের পক্ষে ছিল অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
গত ১৭ মে নাইকো দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া।
হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার কায়সার।
গত ১৯ মার্চ নাইকো দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯-এর বিচারক শেখ হাফিজুর রহমান এ আদেশ দেন।
অভিযোগপত্রভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিম ও নাইকোর দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।
কানাডার কোম্পানি নাইকোর সঙ্গে অস্বচ্ছ চুক্তির মাধ্যমে রাষ্ট্রের বিপুল আর্থিক ক্ষতিসাধন ও দুর্নীতির অভিযোগে ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর খালেদা জিয়াসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদকের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মাহবুবুল আলম বাদী হয়ে রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডার কোম্পানি নাইকোর হাতে তুলে দেওয়ার মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।
২০০৮ সালের ৫ মে এ মামলায় খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়।