নিত্য ও খাদ্যপণ্য নিয়ে ৫ দিন পর টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল শুরু
- আপডেট: ১০:০৮:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
- / ১৭৮
শাহিন আলম | টেকনাফ (কক্সবাজার)
বৈরী আবহাওয়ার কারণে টানা পাঁচ দিন বন্ধ থাকার পর আবারও নৌযান চলাচল শুরু হয়েছে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে। এতে করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী এবং জরুরি প্রয়োজনে আটকে পড়া দ্বীপবাসীরা ফিরে যেতে পারছেন সেন্টমার্টিনে। তবে শুরুতেই নারীদের যাতায়াতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় ঘাটে ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
রোববার (১ জুন) সকাল ১১টার দিকে টেকনাফ পৌরসভার খায়ুকখালী ঘাট থেকে মো. আরাফাত মাঝির একটি ট্রলার ৫০ জন যাত্রী নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। তার আগে আরও দুটি ট্রলার দ্বীপের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়।
ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ফিরতে বাধ্য
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, ‘সকালে একটি ট্রলার দ্বীপে পৌঁছেছে। এতে করে কিছু মানুষ এবং খাদ্যপণ্য দ্বীপে পৌঁছেছে। কিন্তু বর্তমানে দ্বীপে আবার ঝড়ো বাতাস শুরু হয়েছে। পানির উচ্চতাও বাড়ছে। দ্বীপবাসী খুব কষ্টে আছে।’
ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, সেন্টমার্টিনের বহু নারী ও শিশু ট্রলারে উঠতে চাইলেও তাদের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এতে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
মাঝারপাড়ার বাসিন্দা শামসুন নাহার বলেন, ‘চিকিৎসা নিতে এসে নয় দিন ধরে টেকনাফে আটকে আছি। আজ ট্রলার চললেও নারীদের উঠতে দিচ্ছে না। আমার কাছে কোনো টাকা নেই। সন্তান নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি।’
দ্বীপবাসীর প্রতি অবহেলা
সেন্টমার্টিন দ্বীপের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, ‘চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় কাজে আসা প্রায় তিন শতাধিক দ্বীপবাসী টেকনাফে আটকা পড়েছেন। অনেকেই মানবেতর জীবনযাপন করছেন। দ্বীপে কেউ আটকা পড়লে আমরা সাহায্য করি। কিন্তু টেকনাফে দ্বীপবাসীরা পড়লে কেউ পাশে আসে না।’
দ্বীপের বাসিন্দা জয়নাল আবেদিন জানান, ‘সেন্টমার্টিনে এখন এক ধরনের হাহাকার চলছে। নিত্যপণ্যের দোকানপাট বন্ধ, পানি সংকট, বিদ্যুৎ সমস্যা—সব মিলিয়ে জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়ার কারণে পাঁচ দিন বন্ধ ছিল নৌ চলাচল। আজ ট্রলার চলাচল শুরু হয়েছে। এতে করে দ্বীপে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছাবে এবং টেকনাফে আটকে পড়া বাসিন্দারা ফিরতে পারবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘দ্বীপের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে যাতে জরুরি প্রয়োজনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া যায়।