অঘোষিত সম্পদের নৌ রহস্য! ৯০ লাখে জমি, কোটি টাকার ফ্ল্যাট!
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকার অভিজাত এলাকায় ২ কাটা জমি কিনেছেন এক সাবেক নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আদম আলী। জমির বাজারমূল্য প্রায় ৯০ লাখ টাকা। কিন্তু এই জমি কেনার অর্থের কোনো উল্লেখ পাওয়া যায়নি তাঁর আয়কর রিটার্ন বা সঞ্চয়ের হিসাব-নিকাশে। বিষয়টি ঘিরে ইতোমধ্যেই দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) একটি অভিযোগ জমা পড়েছে।
অনুসন্ধানে বিস্ময়কর তথ্য:
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত সাবেক কর্মকর্তার নাম আদম আলী। তিনি অবসর নেওয়ার পর ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকার নিকটে ২ কাঠা জমি কিনে সেখানে তৈরি করেন বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ভবন।
জমির মূল্য ধরা হয়েছে ৯০ লাখ টাকা, আর নির্মাণ করা ২৫,০০০ স্কয়ার ফুট ভবনের বাজারমূল্য প্রায় কোটি টাকার বেশি। কিন্তু এই অর্থের উৎস কোথায়, কীভাবে এসেছে তা নেই কোনো আয়কর রিটার্নে।
একজন অভিযোগকারী প্রতিবেদককে জানান:
এই সম্পদ আয়ের কোনো উৎস নেই—না তার আয়কর রিটার্নে, না প্রভিডেন্ট ফান্ড বা পেনশনেও। এমনকি তার নামে কোনো বৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও নেই।
জমির দলিল থেকে দেখা গেছে:
-মৌজা: জোয়ার সাহারা
-জরিপ দাগ: ৩৪৩১৯
-জমির পরিমাণ: ৪.০৬ কাঠা, এর মধ্যে আদম আলীর দখলে ২ কাঠা
-মিউটেশন নং: ১৫২৫৪
-তারিখ: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১২
-অফিস: ক্যান্টনমেন্ট ভূমি অফিস, মিরপুর সার্কেল
এই জমিতে গড়ে তোলা হয়েছে চারটি ফ্ল্যাট, প্রতিটি প্রায় ৬,০০০ স্কয়ার ফুট, সব মিলিয়ে প্রায় কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ।
সাবেক কর্মকর্তা নীরব: এই বিষয়ে অভিযুক্ত আদম আলীর সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলে ও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায় নি।
এনবিআর ও দুদকের অবস্থান:
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (NBR) এর নিয়ম অনুযায়ী, ৫ লাখ টাকার বেশি যে কোনো সম্পদ আয়কর রিটার্নে দেখানো বাধ্যতামূলক। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তার সর্বশেষ টিআইএন রিটার্নে জমি বা ফ্ল্যাট নির্মাণ–সংক্রান্ত কোনো তথ্যই নেই।
দুদকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানিয়েছেন:
আমরা একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এটি প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ের পর্যায়ে রয়েছে। সত্যতা মিললে সম্পদের উৎস ও কর ফাঁকি তদন্তে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জনমনে প্রশ্ন:
– চাকরি শেষে কয়েক মাসের ব্যবধানে কীভাবে এই বিপুল সম্পদ অর্জন?
– আয়কর নথিতে তথ্য নেই কেন?
– কোনো অবৈধ উৎস থেকে এই অর্থ এসেছে কি না?
– সরকারি দায়িত্বে থাকার সময় থেকেই কি এই অর্থ সংগ্রহ?