১২:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫

‘সেফ এক্সিট’ মন্তব্যে রাজনৈতিক ঝড়: উপদেষ্টাদের পাল্টা প্রতিক্রিয়া অব্যাহত

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ০৮:৪৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫
  • / ৫১

স্টাফ রিপোর্টার | বর্তমান কথা

অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা ‘সেফ এক্সিট’ (নিরাপদ প্রস্থান) খুঁজছেন—এমন মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি করেছেন। তার এ বক্তব্যে উপদেষ্টারা একের পর এক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিতর্ককে আরও উসকে দিচ্ছেন।

ইতোমধ্যে অন্তত পাঁচজন উপদেষ্টা প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ নাহিদের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন, কেউ আবার তথ্য-প্রমাণ চেয়েছেন।

এনসিপি দাবি করছে, কারা কোন দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করছেন, তাদের নামের তালিকা তাদের হাতে রয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই তালিকা শিগগিরই জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৪ অক্টোবর একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম বলেন,

“উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন।”

তার এই মন্তব্য মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

এনসিপির নেতারা বলছেন, এটি কোনো গোপন তথ্য নয়। বরং সরকারে থাকা কিছু উপদেষ্টার রাজনৈতিক আচরণ প্রকাশ্যেই দৃশ্যমান। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, “অনেকেই যেন মনে করছেন, তাদের পছন্দের দলই নিশ্চিতভাবে ক্ষমতায় আসছে।”

এক সিনিয়র এনসিপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “কিছু আজ্ঞাবহ উপদেষ্টাকে পরামর্শ পরিষদে নেওয়া ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। ছাত্র নেতৃত্বের বদলে পুরোনো রাজনীতিকদের প্রভাবই এখন প্রবল হয়ে উঠছে।”

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন বলেন, “নাহিদ ইসলাম সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন। তিনি ভেতর থেকে দেখেছেন কে কী করছেন। তাই তার বক্তব্য নিছক রাজনৈতিক নয়, বাস্তবতার প্রতিফলন।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা বাইরে থেকে যা দেখছি, তাও হতাশাজনক। অনেক উপদেষ্টা যেন দায়িত্ব পালন করছেন কেবল দায়সারা ভাব নিয়ে।”

দলটির নেতারা অভিযোগ করেছেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের রেখে যাওয়া মিডিয়া এস্টাবলিশমেন্ট এখনো সক্রিয়। তারা ছাত্র উপদেষ্টাদের টার্গেট করে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”

এনসিপির আরেক নেতা সারজিস আলম বলেন, “কিছু উপদেষ্টা যেন শুধু নির্বাচনের মাধ্যমে দায়সারা দায়িত্ব শেষ করে ‘এক্সিট’ নিতে চান। এভাবে অভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকার টেকসই হতে পারে না।”

উল্লেখ্য, নাহিদের মন্তব্যের পর প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, সেতু উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং ধর্ম উপদেষ্টা আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন।
রিজওয়ানা হাসান নাহিদ ইসলামকে আহ্বান জানিয়েছেন, তিনি যেন তার দাবির পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করেন।

Please Share This Post in Your Social Media

বিজ্ঞাপন: ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট এর জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৮২৪৯০৯০১০
বিজ্ঞাপন: ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট এর জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৮২৪৯০৯০১০

‘সেফ এক্সিট’ মন্তব্যে রাজনৈতিক ঝড়: উপদেষ্টাদের পাল্টা প্রতিক্রিয়া অব্যাহত

আপডেট: ০৮:৪৭:৫৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

স্টাফ রিপোর্টার | বর্তমান কথা

অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা ‘সেফ এক্সিট’ (নিরাপদ প্রস্থান) খুঁজছেন—এমন মন্তব্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি করেছেন। তার এ বক্তব্যে উপদেষ্টারা একের পর এক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিতর্ককে আরও উসকে দিচ্ছেন।

ইতোমধ্যে অন্তত পাঁচজন উপদেষ্টা প্রকাশ্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। কেউ নাহিদের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন, কেউ আবার তথ্য-প্রমাণ চেয়েছেন।

এনসিপি দাবি করছে, কারা কোন দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করছেন, তাদের নামের তালিকা তাদের হাতে রয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই তালিকা শিগগিরই জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৪ অক্টোবর একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে নাহিদ ইসলাম বলেন,

“উপদেষ্টাদের অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন।”

তার এই মন্তব্য মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দেয়।

এনসিপির নেতারা বলছেন, এটি কোনো গোপন তথ্য নয়। বরং সরকারে থাকা কিছু উপদেষ্টার রাজনৈতিক আচরণ প্রকাশ্যেই দৃশ্যমান। তাদের বক্তব্য অনুযায়ী, “অনেকেই যেন মনে করছেন, তাদের পছন্দের দলই নিশ্চিতভাবে ক্ষমতায় আসছে।”

এক সিনিয়র এনসিপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “কিছু আজ্ঞাবহ উপদেষ্টাকে পরামর্শ পরিষদে নেওয়া ছিল ভুল সিদ্ধান্ত। ছাত্র নেতৃত্বের বদলে পুরোনো রাজনীতিকদের প্রভাবই এখন প্রবল হয়ে উঠছে।”

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্থা শারমিন বলেন, “নাহিদ ইসলাম সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে ছিলেন। তিনি ভেতর থেকে দেখেছেন কে কী করছেন। তাই তার বক্তব্য নিছক রাজনৈতিক নয়, বাস্তবতার প্রতিফলন।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা বাইরে থেকে যা দেখছি, তাও হতাশাজনক। অনেক উপদেষ্টা যেন দায়িত্ব পালন করছেন কেবল দায়সারা ভাব নিয়ে।”

দলটির নেতারা অভিযোগ করেছেন, “ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের রেখে যাওয়া মিডিয়া এস্টাবলিশমেন্ট এখনো সক্রিয়। তারা ছাত্র উপদেষ্টাদের টার্গেট করে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”

এনসিপির আরেক নেতা সারজিস আলম বলেন, “কিছু উপদেষ্টা যেন শুধু নির্বাচনের মাধ্যমে দায়সারা দায়িত্ব শেষ করে ‘এক্সিট’ নিতে চান। এভাবে অভ্যুত্থান-পরবর্তী সরকার টেকসই হতে পারে না।”

উল্লেখ্য, নাহিদের মন্তব্যের পর প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, সেতু উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এবং ধর্ম উপদেষ্টা আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন।
রিজওয়ানা হাসান নাহিদ ইসলামকে আহ্বান জানিয়েছেন, তিনি যেন তার দাবির পক্ষে প্রমাণ উপস্থাপন করেন।