০১:৫২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৫

এল-ফাশেরে শত শত লাশ রাস্তায়, কবর দেওয়ার কেউ নেই

নিউজ ডেস্ক
  • আপডেট: ১০:০৮:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫
  • / ৬০

আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন | বর্তমান কথা

সুদানের উত্তর দারফুর রাজ্যের রাজধানী এল-ফাশের শহরে ভয়াবহ সহিংসতার পর রাস্তায় পড়ে আছে শত শত লাশ। কবর দেওয়ার মতো কেউ নেই। গত সপ্তাহে শহরটি দখল করে নেয় আধা-সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। জাতিসংঘ জানায়, এ সময় তারা কমপক্ষে ১,৫০০ মানুষকে হত্যা করে, আর শুধুমাত্র একটি হাসপাতালে নিহত হয় প্রায় ৪৬০ জন

শহরে আটকে থাকা সাধারণ মানুষ এখন মারাত্মক বিপদের মুখে। অনেকেই নিহত হয়েছেন, আহতরা খোলা আকাশের নিচে চিকিৎসাহীন অবস্থায় পড়ে আছেন। জাতিসংঘের তথ্যমতে, প্রায় ৩৬ হাজার মানুষ ৭০ কিলোমিটার দূরের তাভিলা শহরে পালিয়ে গেছেন, যেখানে ইতোমধ্যেই ৬ লাখ ৫০ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

হায়াত নামে এক নারী জানান, সাতজন আরএসএফ সদস্য তাদের বাড়িতে ঢুকে লুটপাট চালায় এবং তার ১৬ বছর বয়সি ছেলেকে হত্যা করে। তিনি বলেন, “আমরা রাস্তায় অসংখ্য লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি, আহতদের কেউ উদ্ধার করতে পারেনি।”

আরেকজন বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি হুসেইন বলেন, “এল-ফাশেরের পরিস্থিতি ভয়াবহ। মৃতদেহগুলো রাস্তায় পড়ে আছে, কবর দেওয়ার কেউ নেই।”

তাভিলা শরণার্থী শিবিরে কর্মরত নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল জানায়, পালিয়ে আসা মানুষের সংখ্যা আসলে অনেক কম। তারা আশঙ্কা করছে, যারা রওনা দিয়েছিল, তাদের অনেকেই পথে মারা গেছে।

জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানান, দারফুরে ত্রাণ কার্যক্রম জোরদারের জন্য সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা অনুমোদন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “৪৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তাদের মধ্যে রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী ও বেসামরিক নাগরিক ছিলেন।”

সুদান বিশেষজ্ঞ শায়না লুইস বলেন, “দারফুরে এ হত্যাযজ্ঞ অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই গণহত্যার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছিলাম, কিন্তু কার্যকর প্রতিক্রিয়া পাইনি।”

লুইস আরও জানান, মহাকাশ থেকে পাওয়া স্যাটেলাইট চিত্রে রক্তাক্ত দৃশ্য ফুটে উঠেছে— বিশাল এলাকায় লালচে দাগ, মৃতদেহের মতো ছায়া স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

বর্তমানে শহরটিতে খাদ্য, পানি ও ওষুধের মারাত্মক সংকট চলছে। মানবিক সংগঠনগুলো বলছে, এটি সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়

সূত্র : আল জাজিরা

Please Share This Post in Your Social Media

বিজ্ঞাপন: ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট এর জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৮২৪৯০৯০১০
বিজ্ঞাপন: ওয়েব ডিজাইন ও ডেভেলপমেন্ট এর জন্য যোগাযোগ করুন: ০১৮২৪৯০৯০১০

এল-ফাশেরে শত শত লাশ রাস্তায়, কবর দেওয়ার কেউ নেই

আপডেট: ১০:০৮:১৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন | বর্তমান কথা

সুদানের উত্তর দারফুর রাজ্যের রাজধানী এল-ফাশের শহরে ভয়াবহ সহিংসতার পর রাস্তায় পড়ে আছে শত শত লাশ। কবর দেওয়ার মতো কেউ নেই। গত সপ্তাহে শহরটি দখল করে নেয় আধা-সামরিক বাহিনী র‌্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)। জাতিসংঘ জানায়, এ সময় তারা কমপক্ষে ১,৫০০ মানুষকে হত্যা করে, আর শুধুমাত্র একটি হাসপাতালে নিহত হয় প্রায় ৪৬০ জন

শহরে আটকে থাকা সাধারণ মানুষ এখন মারাত্মক বিপদের মুখে। অনেকেই নিহত হয়েছেন, আহতরা খোলা আকাশের নিচে চিকিৎসাহীন অবস্থায় পড়ে আছেন। জাতিসংঘের তথ্যমতে, প্রায় ৩৬ হাজার মানুষ ৭০ কিলোমিটার দূরের তাভিলা শহরে পালিয়ে গেছেন, যেখানে ইতোমধ্যেই ৬ লাখ ৫০ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।

হায়াত নামে এক নারী জানান, সাতজন আরএসএফ সদস্য তাদের বাড়িতে ঢুকে লুটপাট চালায় এবং তার ১৬ বছর বয়সি ছেলেকে হত্যা করে। তিনি বলেন, “আমরা রাস্তায় অসংখ্য লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি, আহতদের কেউ উদ্ধার করতে পারেনি।”

আরেকজন বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি হুসেইন বলেন, “এল-ফাশেরের পরিস্থিতি ভয়াবহ। মৃতদেহগুলো রাস্তায় পড়ে আছে, কবর দেওয়ার কেউ নেই।”

তাভিলা শরণার্থী শিবিরে কর্মরত নরওয়েজিয়ান রিফিউজি কাউন্সিল জানায়, পালিয়ে আসা মানুষের সংখ্যা আসলে অনেক কম। তারা আশঙ্কা করছে, যারা রওনা দিয়েছিল, তাদের অনেকেই পথে মারা গেছে।

জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক জানান, দারফুরে ত্রাণ কার্যক্রম জোরদারের জন্য সেন্ট্রাল ইমার্জেন্সি রেসপন্স ফান্ড থেকে ২০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা অনুমোদন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “৪৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তাদের মধ্যে রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী ও বেসামরিক নাগরিক ছিলেন।”

সুদান বিশেষজ্ঞ শায়না লুইস বলেন, “দারফুরে এ হত্যাযজ্ঞ অত্যন্ত মর্মান্তিক। আমরা এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই গণহত্যার ঝুঁকি সম্পর্কে সতর্ক করেছিলাম, কিন্তু কার্যকর প্রতিক্রিয়া পাইনি।”

লুইস আরও জানান, মহাকাশ থেকে পাওয়া স্যাটেলাইট চিত্রে রক্তাক্ত দৃশ্য ফুটে উঠেছে— বিশাল এলাকায় লালচে দাগ, মৃতদেহের মতো ছায়া স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।

বর্তমানে শহরটিতে খাদ্য, পানি ও ওষুধের মারাত্মক সংকট চলছে। মানবিক সংগঠনগুলো বলছে, এটি সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়

সূত্র : আল জাজিরা