ইসরাইল–হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে গাজার মানুষের উচ্ছ্বাস
- আপডেট: ০৪:৪৩:২০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫
- / ৬৩
ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষরের খবরে গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে উচ্ছ্বাসের জোয়ার বইছে।
চুক্তি স্বাক্ষরের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর গতকাল রাতেই আনন্দ মিছিল বের করেন গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসের বাসিন্দারা। কিশোর–তরুণরা বাঁশি, খঞ্জনি ও ড্রাম বাজিয়ে রাস্তায় নেমে আসে; কেউ গান গেয়ে, কেউ নেচে উল্লাসে মেতে ওঠে।
অনেকেই খুশিতে কেঁদে ফেলেন, কেউ হাততালি দেন, কেউ চিৎকার করে বলেন “আল্লাহু আকবর”।
খান ইউনিসের তরুণী ইমান আল কৌকা বলেন,
“আজ আমাদের আনন্দের দিন, আবার দুঃখেরও দিন। আমরা যুদ্ধের মধ্যে যাদের হারিয়েছি, তাদের কথা মনে পড়ছে। ইসরাইল আমাদের শহর ধ্বংস করেছে—আমরা যেন প্রাগৈতিহাসিক যুগে ফিরে গেছি।”
ইসরাইলি বাহিনীর বোমায় বাড়িঘর হারিয়ে গাজার দেইর আল বালাহ এলাকায় আশ্রয় নিয়েছেন আহমেদ দাহমান। তিনি জানান,
“আমি বাবাকে হারিয়েছি কিন্তু দাফন করতে পারিনি। অবশেষে গাজায় রক্তপাত বন্ধ হচ্ছে, এটা আনন্দের খবর। তবে ভয় আছে—যখন ফিরব, হয়তো কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না।”
দাহমান আরও বলেন,
“আমার প্রথম কাজ হবে বাবার দেহাবশেষ খুঁজে বের করে তার দাফন সম্পন্ন করা।”
🌍 চুক্তি
গত ২৯ সেপ্টেম্বর সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে গাজা যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত নতুন একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করেন।
তাৎক্ষণিকভাবে ইসরাইল ও মধ্যস্থতাকারী দেশ মিসর ও কাতার সম্মতি দিলেও তখন হামাস কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
পরে ৩ অক্টোবর হামাসের সম্মতির পর ৪ অক্টোবর ট্রাম্প ইসরাইলকে বোমাবর্ষণ বন্ধের আহ্বান জানান। এর পর ৬ অক্টোবর মিসরের লোহিত সাগর তীরবর্তী শহর শারম আল শেখে ইসরাইল, হামাস, যুক্তরাষ্ট্র, মিসর ও কাতারের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে বৈঠক শুরু হয়।
দুই দিনেরও বেশি সময় ধরে আলোচনা শেষে গতকাল রাতে উভয় পক্ষ ট্রাম্পের প্রস্তাবের প্রাথমিক পর্যায় বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বাক্ষর করে।
এই পর্যায়টির মেয়াদ হবে ৬ সপ্তাহ, যেখানে:
হামাস তাদের হাতে থাকা সব জিম্মিকে মুক্তি দেবে,
ইসরাইল গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করবে,
কারাগারে থাকা ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দেবে,
এবং গাজা থেকে পর্যায়ক্রমে সেনা প্রত্যাহার করবে।
























